পায়রা সেতুর উদ্বোধন

অনলাইন ডেস্ক: পটুয়াখালীর দুমকির লেবুখালীতে পায়রা নদীর ওপর নির্মিত দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের বহুল কাঙ্ক্ষিত পায়রা সেতুর উদ্বোধন করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতু চালু হওয়ায় সড়কপথে সরাসরি কুয়াকাটা পৌঁছানো আরও সহজ হল।

আজ (রোববার) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি আনুষ্ঠানিকভাবে এ সেতুর উদ্বোধন করেন তিনি। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-তামাবিল মহাসড়কসহ উভয় সড়কে পৃথক এসএমভিটি লেনসহ ৬-লেন নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

তিনি বলেন, “পায়রা সেতুতে সশরীরে উপস্থিত থেকে যদি তিনি উদ্বোধনের এই আনুষ্ঠানিকতা সারতে পারতেন, যদি গাড়ি চালিয়ে সেতু পার হতে পারতেন, তাহলে সবচেয়ে বেশি খুশি হতেন। কিন্তু মহামারীর মধ্যে ‘একপ্রকার বন্দি জীবনে’ তা সম্ভব হয়নি। তবে আমার আকাঙ্ক্ষা আছে একদিন গাড়ি চালিয়ে সম্পূর্ণ আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন, দৃষ্টিনন্দন এ নতুন সেতুটা দেখতে যাবো অবশ্যই।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সারাদেশে একটা সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পদক্ষেপ আমরা গ্রহণ করেছি। সে লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছি। ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে কিন্তু ধরলা সেতুও আমাদের সময় করা। যমুনা নদীর ওপর রেলসহ বঙ্গবন্ধু সেতু, এই আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা। কাজেই এদেশে যতটুকু উন্নয়ন সেটা আমরাই করেছি। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও দৃষ্টিনন্দন রেল স্টেশনসহ যত উন্নয়ন হয়েছে সবই আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে।”

বরিশাল বিভাগে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বরিশাল বিভাগে শুধু রাস্তাই আমরা করিনি, সেখানে ক্যান্টনমেন্ট নির্মাণ করেছি, একটি নৌঘাঁটি হচ্ছে, বিমানঘাঁটি হচ্ছে। কোস্টগার্ডে ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এবং ঘাঁটি, বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে, বীজ গবেষণা কেন্দ্র করেছি গলাচিপায়। এভাবেই কিন্তু পুরো বরিশাল জুড়েই আমরা উন্নয়ন করছি।”

পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের লেবুখালী পয়েন্টে সেতুটি নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পায় ২০১২ সালে। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পায়রা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই। কার্যাদেশে সেতু নির্মাণে ৩৩ মাস সময় বেঁধে দেওয়া হলেও দুই দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। নির্ধারিত সময়ের আগেই যান চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুর ৮২ ভাগ অর্থায়ন করে কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট এবং এপেক ফান্ড। নির্মাণ কাজ করেছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কনস্ট্রাকশন।

পায়রা সেতু চালুর মাধ্যমে বরিশাল থেকে কুয়াকাটা যেতে আর ফেরির দুর্ভোগ পোহাতে হবে না। আগে যেখানে বরিশাল থেকে কুয়াকাটা যেতে সময় লাগত ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা এখন পায়রা সেতু চালু হলে সময় লাগবে মাত্র ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা। এ ফেরিবিহীন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হলে কুয়াকাটা সমুদ্রবন্দর ও পর্যটনকেন্দ্রের আরও আকর্ষণ বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।- পার্সটুডে